""

খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের ছাত্র সমাবেশ


খাগড়াছড়ি : “গণতান্ত্রিক শিক্ষা ব্যবস্থা কায়েমের লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হোন, গণবিরোধী জেলা পরিষদের মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ কর, শিক্ষার মান ধ্বংসের চক্রান্ত রুখে দাড়াঁও” এই শ্লোগানে রবিবার (১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭)মহান শিক্ষা দিবসে খাগড়াছড়িতে ছাত্র সমাবেশ করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি) খাগড়াছড়ি জেলা শাখা।


পূর্বনির্ধারিত ‘ছাত্র সমাবেশ’ খাগড়াছড়ি সদর স্বনির্ভর বাজারে করার কথা থাকলেও আজ সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খাগড়াছড়ি শহরের পৌর এলাকায় প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করায় পিসিপি’র নেতা-কমীর্রা পৌর এলাকার বাইরে গিরিফুল এলাকায় ছাত্র সমাবেশ করে। সকাল ১১টায় অনুষ্ঠিত ছাত্র সমাবেশে খাগড়াছড়ি জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় সহ¯্রাধিক ছাত্র-ছাত্রী অংশ গ্রহণ করে।
সমাবেশ শুরুতে শিক্ষার আন্দোলনে শহীদ বাবুল,গোলাম মোস্তোফা ও ওয়াজিউল্লাহসহ যারা গণতান্ত্রিক আন্দোলন করতে গিয়ে শহীদ হয়েছেন তাদের শ্রদ্ধা ও সম্মান জানিয়ে ১মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

সমাবেশে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অমল ত্রিপুরার সঞ্চালনায় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তপন চাকমার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, পিসিপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি ও ইউপিডিএফ-এর অন্যতম সংগঠক মিঠুন চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জিকো ত্রিপুরা, পিসিপি’র কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অনিল চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশন খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি দ্বিতীয়া চাকমা, পিসিপি’র জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক রুপেশ চাকমা প্রমুখ।

সমাবেশ থেকে বক্তারা আজ সকালে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা শহরে ১৪৪ ধারা জারি করার ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানান। ১৪৪ ধারার জারির ঘটনা পিসিপি’র শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ভ-ুল করে দেওয়ার জন্য প্রশাসনের ষড়যন্ত্র বলে বক্তারা আখ্যায়িত করেন।

বক্তারা বলেন, পাহাড়ি জনগণ পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে কোথাও নিরাপদ নয়। পাশের দেশ মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের বিতাড়ন করে যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে, তা রং ছড়িয়ে ধর্মীয় উস্কানি দেওয়া হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় সম্প্রতিককালে বিচ্ছিন্নভাবে পাহাড়িদের উপর সম্প্রদায়িক হামলা চালানো হচ্ছে। গত কয়েক দিন আগে মাটিরাঙ্গায় বৌদ্ধ ভিক্ষুর ওপর হামলা হয়েছে। গত এক সপ্তাহের মধ্যে তিনটি খুনের ঘটনা ঘটেছে।

নেতৃবৃন্দ, পাশের দেশের সমস্যার কারণে বাংলাদেশে যারা ধর্মীয় হিংসা ও সম্প্রদায়িক হানাহানি সৃষ্টি করতে চাইছে তাদেরকে দেশের জনগণের শত্রু ও মানবতার শত্রু হিসেবে আখ্যায়িত করেন। সরকারকে এই বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানান। ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক হানাহানি সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য বক্তারা আহ্বান জানান।

সমাবেশ থেকে বক্তারা পার্বত্য জেলা পরিষদে ঘুষ বাণিজ্যর মাধ্যমে অযোগ্য শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম বাতিল ও দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধ এবং ঝুঁকিপূর্ণ স্কুল নির্মাণ, লংগুদুর সাম্প্রদায়িক হামলাসহ পাহাড় ধসে ক্ষতিপ্রস্ত শিক্ষার্থীদের ফি মওকুফ করতে বক্তারা সরকারের কাছে জোর দাবি জানান।

বক্তারা পার্বত্য চট্টগ্রামে দুযোর্গপূর্ণ পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে ও ছাত্র সমাজের ন্যায্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে পিসিপি’র পতাকা তলে সমবেত হয়ে আন্দোলন সংগ্রাম বেগবান করার জন্য ছাত্র সমাজের প্রতি আহ্বান জানান।


সমাবেশে শেষে একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি গিরীফুল মাঠ থেকে শুরু হয়ে পেরাছড়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এসে শেষ হয়।




0/Post a Comment/Comments